০২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিজয়নগরবাসীর শান্তি চলে গেল প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তে।

জহির শাহ বিজয়নগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • Update Time : ০১:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩৮ Time View

জহির শাহ বিজয়নগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: কিছুদিন ধরে বিজয়নগরের মানুষ অশান্তিতে ভুগছে। তিতাস নদীর পাড়ে বসে যেসব মানুষ শত বছর ধরে একই ভাষায় কথা বলেছে, একই মাঠে ধান কেটেছে, একই হাটে বেচাকেনা করেছে, একই স্কুলে পড়েছে আর একই মসজিদে নামাজ পড়েছে—তাদের হৃদয়ের বাঁধ ভেঙে দিচ্ছে একটি প্রশাসনিক খসড়া প্রস্তাব, যা কেবল একটি ইউনিয়নকে নয় বরং একটি সমাজব্যবস্থাকে, একটি সাংস্কৃতিক ঐক্যকে, একটি প্রজন্মের স্মৃতিকে, এমনকি একটি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেও দুই ভাগে ছিঁড়ে ফেলতে চাচ্ছে; বিজয়নগরের বুধন্তী, চান্দুরা আর হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে সরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-এ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব মানে যেন কৃত্রিমভাবে তিতাস নদীর স্রোত ঘুরিয়ে দেওয়া, যেন চিরচেনা পাট ক্ষেতের মাঝে হঠাৎ একদল ইমারত গজিয়ে তোলা—যা স্থানিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করে,

 

ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে, গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং উন্নয়নকে উপহাস করে; কারণ নির্বাচনের নামে যে সীমানা পুনর্বিন্যাসের যুক্তি নির্বাচন কমিশন হাজির করছে, তা কেবল ভোটার সংখ্যার তত্ত্বে আটকে আছে—তারা বলছে, এর মাধ্যমে নাকি নির্বাচনী সমতা আসবে, প্রশাসনিক কার্যকারিতা বাড়বে, কিন্তু কেউই বুঝতে পারছে না যে ভোট কেবল সংখ্যা নয়, এটি মানুষের পরিচয়, সম্মান, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতিনিধিত্ব করে, আর এই তিনটি ইউনিয়ন একসঙ্গে শুধুই প্রশাসনিক ইউনিট নয় বরং একটি জীবন্ত সংস্কৃতির অংশ—যেখানে ভাষা, আচার, জীবনযাপন এমনকি লোককাহিনি, পালাগান, মেলার ধরণ পর্যন্ত এক, যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ, রাস্তা, বাজার—সবকিছুই বিজয়নগর উপজেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে এবং শত বছর ধরে এর সঙ্গে মানুষ গড়ে তুলেছে আত্মিক সম্পর্ক, যা একদিনে কেটে ফেলা যায় না।

 

এমনকি প্রশাসনিক যুক্তি দিয়ে এই বিচ্ছিন্নতা প্রতিষ্ঠা করা মানেই ভৌগোলিক বাস্তবতাকে বুড়ো আঙুল দেখানো, কারণ এই তিন ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে যাতায়াত করে, তারা সদর হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সরকারী কলেজ, কোর্ট-কাচারি—সবই ব্যবহার করে, অথচ এখন বলা হচ্ছে তারা যেন চলে যায় সরাইল-আশুগঞ্জে, যেখানে পৌঁছাতে সময় লাগে অনেক বেশি, সড়ক অবকাঠামো অনুন্নত, সামাজিক যোগাযোগ দুর্বল এবং ইতিহাস সম্পূর্ণ আলাদা, ফলে এই সিদ্ধান্ত শুধু কাগজে-কলমে গ্রহণযোগ্য হলেও বাস্তবে এটি একটি বিভ্রান্তিকর, নির্মম ও প্রতিক্রিয়াশীল সিদ্ধান্ত, যা জনগণের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এটি জনমত উপেক্ষার চরম দৃষ্টান্ত—যেখানে ৯৬,০০০ ভোটারের চিন্তা, যুক্তি, কণ্ঠস্বর কিছুই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি; অথচ সংবিধান বলে, “জনগণের ইচ্ছাই সর্বোচ্চ,” তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত কাদের স্বার্থে, কাদের দৃষ্টিতে এবং কাদের আদেশে নেয়া হলো?

 

এই প্রশ্ন নিয়ে ৩১ জুলাই থেকে বিজয়নগর জ্বলে উঠেছে, আন্দোলন আর প্রতিরোধের আগুনে উত্তপ্ত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সামনে প্রতীকী অনশন হয়েছে, স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-নারী-ছাত্রজনতা একজোট হয়ে একটিই দাবিতে সোচ্চার হয়েছে—“তিনটি ইউনিয়নকে বিজয়নগরেই রাখো, নয়তো আলাদা একটি আসন করো,” এবং এই দাবির পেছনে কেবল আবেগ নয়, রয়েছে পরিসংখ্যান, যুক্তি ও নজির—কারণ বিজয়নগরের ১০টি ইউনিয়নে রয়েছে ২ লক্ষাধিক ভোটার, যা একটি পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় আসনের জন্য যথেষ্ট; তারা বলছে, “এই তিনটি ইউনিয়ন কেটে দিলে শুধু ভোট হারাবো না, হারাবো আমাদের সাংস্কৃতিক আত্মা, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, আমাদের একতাবদ্ধ উন্নয়নের স্বপ্ন”—এবং এই দাবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,

 

বিশেষ করে এনসিপি নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহ যিনি এই সিদ্ধান্তকে “বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, ও বিভাজনমূলক ষড়যন্ত্র” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, “যে জায়গায় জনমতকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেটি আর নির্বাচন কমিশন নয়, সেটি হয়ে ওঠে একতরফা শক্তির দাস,”—আর তাই বিজয়নগরের মানুষ রীতিমতো আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, উচ্চ আদালতের নজির টেনে বলছে ২০১৮ সালে রংপুর-৩ এর মতো, বা মৌলভীবাজার-৪-এর মতো যদি জনগণের চাপ থাকে তবে কমিশন সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়, এবং সেই পথেই তারা হাঁটছে—কারণ এই লড়াই শুধু নির্বাচনী সীমানার নয়, এটি একটি অঞ্চলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই,

 

এবং এই লড়াই চলছে এমন এক সময়, যখন গোটা বাংলাদেশেই নাগরিকদের অধিকার, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক জবাবদিহিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে, এবং বিজয়নগর যেন সেই বৃহত্তর সংগ্রামের একটি প্রতিচ্ছবি—যেখানে ছোট একটি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন কোটি মানুষের আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠছে, যেখানে প্রতিটি প্রতিবাদ, প্রতিটি মানববন্ধন, প্রতিটি স্লোগান হয়ে উঠছে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের অংশ, এবং এই লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে সেই একটি বাক্য: “আমাদের ভাগ করা চলবে না”—এটি কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি একটি ঘোষণা, একটি যুদ্ধের ডাক, একটি জাতিগত ঐক্যের রণহুঙ্কার,

 

যা শুধু বিজয়নগরকে নয়, পুরো বাংলাদেশের ন্যায়বিচার প্রার্থী মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করায়, এবং বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যদি এই খসড়া পরিবর্তন না হয়, যদি প্রশাসন জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে ব্যর্থ হয়, তবে এই প্রতিবাদ ধীরে ধীরে রূপ নেবে আরও বড়, আরও তীব্র, আরও সংগঠিত এক গণজাগরণে, কারণ বিজয়নগরের মানুষ আপস করতে জানে না, তারা মাথা নত করে বাঁচে না, আর সবচেয়ে বড় কথা—তারা জানে, নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে হলে লড়াই করতে হয়, সে লড়াই হোক রাজপথে, হোক আদালতে, হোক সংবাদমাধ্যমে, হোক ইতিহাসের পাতায়—তারা লড়বেই, কারণ এই লড়াই কেবল ইউনিয়নের নয়, এটি পরিচয়ের, আত্মার, আর একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাধীনতার লড়াই।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

About Author Information

বিজয়নগরবাসীর শান্তি চলে গেল প্রশাসনের ভুল সিদ্ধান্তে।

Update Time : ০১:১৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

জহির শাহ বিজয়নগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: কিছুদিন ধরে বিজয়নগরের মানুষ অশান্তিতে ভুগছে। তিতাস নদীর পাড়ে বসে যেসব মানুষ শত বছর ধরে একই ভাষায় কথা বলেছে, একই মাঠে ধান কেটেছে, একই হাটে বেচাকেনা করেছে, একই স্কুলে পড়েছে আর একই মসজিদে নামাজ পড়েছে—তাদের হৃদয়ের বাঁধ ভেঙে দিচ্ছে একটি প্রশাসনিক খসড়া প্রস্তাব, যা কেবল একটি ইউনিয়নকে নয় বরং একটি সমাজব্যবস্থাকে, একটি সাংস্কৃতিক ঐক্যকে, একটি প্রজন্মের স্মৃতিকে, এমনকি একটি জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেও দুই ভাগে ছিঁড়ে ফেলতে চাচ্ছে; বিজয়নগরের বুধন্তী, চান্দুরা আর হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে সরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-এ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব মানে যেন কৃত্রিমভাবে তিতাস নদীর স্রোত ঘুরিয়ে দেওয়া, যেন চিরচেনা পাট ক্ষেতের মাঝে হঠাৎ একদল ইমারত গজিয়ে তোলা—যা স্থানিক বাস্তবতাকে অস্বীকার করে,

 

ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে, গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং উন্নয়নকে উপহাস করে; কারণ নির্বাচনের নামে যে সীমানা পুনর্বিন্যাসের যুক্তি নির্বাচন কমিশন হাজির করছে, তা কেবল ভোটার সংখ্যার তত্ত্বে আটকে আছে—তারা বলছে, এর মাধ্যমে নাকি নির্বাচনী সমতা আসবে, প্রশাসনিক কার্যকারিতা বাড়বে, কিন্তু কেউই বুঝতে পারছে না যে ভোট কেবল সংখ্যা নয়, এটি মানুষের পরিচয়, সম্মান, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতিনিধিত্ব করে, আর এই তিনটি ইউনিয়ন একসঙ্গে শুধুই প্রশাসনিক ইউনিট নয় বরং একটি জীবন্ত সংস্কৃতির অংশ—যেখানে ভাষা, আচার, জীবনযাপন এমনকি লোককাহিনি, পালাগান, মেলার ধরণ পর্যন্ত এক, যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ, রাস্তা, বাজার—সবকিছুই বিজয়নগর উপজেলার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গড়ে উঠেছে এবং শত বছর ধরে এর সঙ্গে মানুষ গড়ে তুলেছে আত্মিক সম্পর্ক, যা একদিনে কেটে ফেলা যায় না।

 

এমনকি প্রশাসনিক যুক্তি দিয়ে এই বিচ্ছিন্নতা প্রতিষ্ঠা করা মানেই ভৌগোলিক বাস্তবতাকে বুড়ো আঙুল দেখানো, কারণ এই তিন ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে যাতায়াত করে, তারা সদর হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সরকারী কলেজ, কোর্ট-কাচারি—সবই ব্যবহার করে, অথচ এখন বলা হচ্ছে তারা যেন চলে যায় সরাইল-আশুগঞ্জে, যেখানে পৌঁছাতে সময় লাগে অনেক বেশি, সড়ক অবকাঠামো অনুন্নত, সামাজিক যোগাযোগ দুর্বল এবং ইতিহাস সম্পূর্ণ আলাদা, ফলে এই সিদ্ধান্ত শুধু কাগজে-কলমে গ্রহণযোগ্য হলেও বাস্তবে এটি একটি বিভ্রান্তিকর, নির্মম ও প্রতিক্রিয়াশীল সিদ্ধান্ত, যা জনগণের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এটি জনমত উপেক্ষার চরম দৃষ্টান্ত—যেখানে ৯৬,০০০ ভোটারের চিন্তা, যুক্তি, কণ্ঠস্বর কিছুই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি; অথচ সংবিধান বলে, “জনগণের ইচ্ছাই সর্বোচ্চ,” তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত কাদের স্বার্থে, কাদের দৃষ্টিতে এবং কাদের আদেশে নেয়া হলো?

 

এই প্রশ্ন নিয়ে ৩১ জুলাই থেকে বিজয়নগর জ্বলে উঠেছে, আন্দোলন আর প্রতিরোধের আগুনে উত্তপ্ত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সামনে প্রতীকী অনশন হয়েছে, স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে, সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কৃষক-শ্রমিক-শিক্ষক-নারী-ছাত্রজনতা একজোট হয়ে একটিই দাবিতে সোচ্চার হয়েছে—“তিনটি ইউনিয়নকে বিজয়নগরেই রাখো, নয়তো আলাদা একটি আসন করো,” এবং এই দাবির পেছনে কেবল আবেগ নয়, রয়েছে পরিসংখ্যান, যুক্তি ও নজির—কারণ বিজয়নগরের ১০টি ইউনিয়নে রয়েছে ২ লক্ষাধিক ভোটার, যা একটি পূর্ণাঙ্গ সংসদীয় আসনের জন্য যথেষ্ট; তারা বলছে, “এই তিনটি ইউনিয়ন কেটে দিলে শুধু ভোট হারাবো না, হারাবো আমাদের সাংস্কৃতিক আত্মা, আমাদের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব, আমাদের একতাবদ্ধ উন্নয়নের স্বপ্ন”—এবং এই দাবির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ,

 

বিশেষ করে এনসিপি নেতা মোহাম্মদ আতাউল্লাহ যিনি এই সিদ্ধান্তকে “বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, ও বিভাজনমূলক ষড়যন্ত্র” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, তিনি বলেছেন, “যে জায়গায় জনমতকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেটি আর নির্বাচন কমিশন নয়, সেটি হয়ে ওঠে একতরফা শক্তির দাস,”—আর তাই বিজয়নগরের মানুষ রীতিমতো আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, উচ্চ আদালতের নজির টেনে বলছে ২০১৮ সালে রংপুর-৩ এর মতো, বা মৌলভীবাজার-৪-এর মতো যদি জনগণের চাপ থাকে তবে কমিশন সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়, এবং সেই পথেই তারা হাঁটছে—কারণ এই লড়াই শুধু নির্বাচনী সীমানার নয়, এটি একটি অঞ্চলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই,

 

এবং এই লড়াই চলছে এমন এক সময়, যখন গোটা বাংলাদেশেই নাগরিকদের অধিকার, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক জবাবদিহিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে, এবং বিজয়নগর যেন সেই বৃহত্তর সংগ্রামের একটি প্রতিচ্ছবি—যেখানে ছোট একটি উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন কোটি মানুষের আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠছে, যেখানে প্রতিটি প্রতিবাদ, প্রতিটি মানববন্ধন, প্রতিটি স্লোগান হয়ে উঠছে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণের অংশ, এবং এই লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে সেই একটি বাক্য: “আমাদের ভাগ করা চলবে না”—এটি কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি একটি ঘোষণা, একটি যুদ্ধের ডাক, একটি জাতিগত ঐক্যের রণহুঙ্কার,

 

যা শুধু বিজয়নগরকে নয়, পুরো বাংলাদেশের ন্যায়বিচার প্রার্থী মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করায়, এবং বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যদি এই খসড়া পরিবর্তন না হয়, যদি প্রশাসন জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে ব্যর্থ হয়, তবে এই প্রতিবাদ ধীরে ধীরে রূপ নেবে আরও বড়, আরও তীব্র, আরও সংগঠিত এক গণজাগরণে, কারণ বিজয়নগরের মানুষ আপস করতে জানে না, তারা মাথা নত করে বাঁচে না, আর সবচেয়ে বড় কথা—তারা জানে, নিজেদের অধিকার রক্ষা করতে হলে লড়াই করতে হয়, সে লড়াই হোক রাজপথে, হোক আদালতে, হোক সংবাদমাধ্যমে, হোক ইতিহাসের পাতায়—তারা লড়বেই, কারণ এই লড়াই কেবল ইউনিয়নের নয়, এটি পরিচয়ের, আত্মার, আর একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাধীনতার লড়াই।